December 22, 2024, 7:35 am
দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
১৯৯৯ সালের ১৬ ফেব্রæয়ারি কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার আড়িয়া ইউনিয়নের কালিদাসপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে সন্ত্রাস বিরোধী এক জনসভায় মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক তৎকালীন জাসদ সভপাতি কাজী আরেফ আহমেদ ৫ রাজনৈতিক সহকর্মীসহ নিহত হন। আজ সেই নির্মম হত্যাযজ্ঞের ২৪তম বার্ষিকী। এখনও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারীরা। এখনও গ্রেফতার হয়নি ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত ৪ আসামী।
ঐ দিন কাজী আরেফের সাথে আর যারা নিহত তারা হলেন ঐ সময়ে কুষ্টিয়া জেলা জাসদের সভাপতি লোকমান হোসেন, সাধারন সম্পাদক এ্যাডভোকেট ইয়াকুব আলী, ¯’ানীয় জাসদ নেতা ইসরাইল হোসেন ও সমসের মন্ডল।
হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত ফাঁসির পলাতক আসামীরা এখনও গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ ও হতাশা দেখিয়েছেন নিহতদের পরিবারের সদস্য ও স্বজনরা। অন্যদিকে এদিকে গ্রেফতার হওয়া ফাঁসির আদেশ প্রাপ্ত আরেক আসামি রওশন আলী যশোর কারাগারে থাকলেও তার ফাঁসি দ্রæত কার্যকর করার দাবি নিহতদের পরিবার ও জাসদ নেতৃন্দের।
বাংলাদেশের বাম রাজনীতির এক শক্তিশালী ব্যক্তিত্ব ও মহান মুক্তিযুদ্ধে সংগঠকের ভুমিকা পালনকারী কাজী আরেফের এ হত্যাকান্ডের ঘটনায় সে সময় দেশজুড়ে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়। দ্রুত দাবি ওঠে ঘটনার সাথে জড়িতদের শাস্তির।
ঘটনার দিনই পুলিশ বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি পরদিন সিআইডিতে হস্তান্তর করা হয়। তদন্ত শেষে সাড়ে পাঁচ বছর পর ২০০৪ সালের ৩০ আগষ্ট কুষ্টিয়ার জেলা ও দায়রা জজ আদালত ১০ আসামীর ফাঁসি ও ১২ আসামীর যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দিয়ে রায় ঘোষণা করা হয়।
রায়ের বিরুদ্ধে আসামীপক্ষ আপিল করলে ২০০৮ সালের ৫ আগষ্ট হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ নিম্ন আদালতের মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ১০ আসামীর মধ্যে ৯ জনের ফাঁসির আদেশ বহাল রাখেন। একই সাথে যাবজ্জীবন কারাদন্ডপ্রাপ্ত ১২ আসামীর সাজা মওকুফ করেন হাইকোর্ট। এরপর হাইকোর্টের ওই রায়ের বিরুদ্ধে ফাঁসির তিন আসামী রাশেদুল ইসলাম ঝন্টু, আনোয়ার হোসেন ও সাফায়েত হোসেন হাবিব ওরফে হাবি সুপ্রিম কোর্টে আপিল করে।
২০১১ সালের ৭ আগষ্ট প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে শুনানি শেষে আপিলকারী ফাঁসির ৯ জনের সাজা বহাল রাখে।
পরে ফাঁসির দন্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামীরা সুপ্রিমকোর্টে রিভিউ করলে সেটিও ২০১৪ সালের ১৯ নভেম্বর খারিজ করে দেন আদালত। এরপর ২০১৬ সালের ৭ জানুয়ারী গভীর রাতে যশোর কারাগারে মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত তিন আসামী আনোয়ার হোসেন, রাশেদুল ইসলাম ঝন্টু ও সাফায়েত হোসেন হাবিব ওরফে হাবির ফাঁসি কার্যকর করা হয়। চারজন এখনও পলাতক রয়েছে।
কুষ্টিয়া জেলা জাসদের অন্যতম নেতা ও মিরপুর জাসদেও সাধারণ সম্পাদক আহমদ আলী মনে করেন এ হত্যাকান্ডকে সাদা চোখে দেখলে ভূল হবে। কারজী আরেফর মতো মানুষকে গুলি করে মেরে ফেলা কোন সাধারণ ঘটনা হতে পারে না। তারপরও আইন তার নিজস্ব গতিতে এগিয়েছে। তিনি পলাতক ফাঁসির দন্ডদেশপ্রাপ্ত অন্যসব আসামীদের দ্রুত গ্রেফতার দাবি করেন।
নিহত এ্যাডভোকেট ইয়াকুব আলীর সন্তান কুষ্টিয়া জজ আদালতের এজিপি এ্যাডভোকেট আল মুজাহিদ মিঠু বলেন সরকারের সদিচ্ছার সর্বোচ্চটি এখানে দেখাতে হবে। তিনি পুলিশকে আরও তৎপর হয়ে পলাতকদের ধরে এনে ফাঁসি কার্যকরের আহবার জানান।
Leave a Reply